নয়া জামানা
নয়া জামানা ডেস্ক
ধুপকাঠি তৈরির ব্যবসা শুরু করতে চাইলে প্রথমে একটি সুপরিকল্পিত ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করতে হবে। এই পরিকল্পনার মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি:
১. বাজার গবেষণা: ধুপকাঠির বাজারে চাহিদা, প্রতিযোগীদের কৌশল এবং গ্রাহকদের পছন্দের সুগন্ধি ও প্যাকেজিং সম্পর্কে জানতে হবে।
২. ব্যবসার ধরণ: আপনি ছোটো আকারে হাতে তৈরি ধুপকাঠি দিয়ে শুরু করতে পারেন অথবা মেশিন ব্যবহার করে বড়ো আকারে উৎপাদন করতে পারেন।
৩. নিবন্ধন ও লাইসেন্স: ব্যবসা শুরু করার আগে কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জরুরি। যেমন:ব্যবসার নাম নিবন্ধন।
জিএসটি (GST) নিবন্ধন।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (MSME) হিসেবে উদ্যান পোর্টালে নিবন্ধন।
বড়ো আকারে উৎপাদনের জন্য ফায়ারিং ইউনিট লাইসেন্স এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের অনুমতি।
প্রয়োজনীয় কাঁচামাল

ধুপকাঠি তৈরির জন্য কয়েকটি প্রধান কাঁচামাল প্রয়োজন হয়:
বাঁশের কাঠি (Bamboo sticks): এটি ধুপকাঠির মূল ভিত্তি।
কাঠের গুঁড়ো ও কাঠকয়লার গুঁড়ো: এই দুটি উপাদান ধুপকাঠির প্রধান মিশ্রণ তৈরি করে।
জিগাত পাউডার: এটি একটি আঠালো উপাদান যা গুঁড়োকে কাঠির সাথে আটকে রাখতে সাহায্য করে।
সুগন্ধি তেল ও ডিপ্থালিন পাউডার: ধুপকাঠিকে সুগন্ধযুক্ত করার জন্য এই উপাদানগুলো ব্যবহার করা হয়।

মোড়ক: সুগন্ধি ধরে রাখার জন্য প্যাকেজিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ
ধুপকাঠি ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ নির্ভর করে আপনি কোন পদ্ধতিতে উৎপাদন শুরু করছেন তার ওপর।

ছোটো আকারের হাতের কাজ: হাতে তৈরি ধুপকাঠির জন্য আপনার বিনিয়োগ অনেক কম হবে। এটি প্রায় ₹২০,০০০ থেকে ₹৫০,০০০ এর মধ্যে শুরু করা সম্ভব। এতে কাঁচামাল এবং কিছু প্রাথমিক সরঞ্জামের খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
স্বয়ংক্রিয় বা আধা-স্বয়ংক্রিয় মেশিন ব্যবহার: এটি একটি বড়ো বিনিয়োগের ব্যাপার। একটি আধা-স্বয়ংক্রিয় মেশিনের দাম প্রায় ₹১.৫০ লক্ষ থেকে ₹২.৫০ লক্ষ হতে পারে। একটি পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় মেশিনের দাম এর থেকে অনেক বেশি হবে। এর সাথে কাঁচামাল, প্যাকেজিং, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে প্রাথমিকভাবে ₹২ লক্ষ থেকে ₹৫ লক্ষ বা তার বেশি খরচ হতে পারে।
বাজার ও বিপণন
ধুপকাঠির বাজার খুবই বিস্তৃত এবং এর চাহিদা সব সময়ই থাকে।প্রধানত, এর বাজার হলো:
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মন্দির, মসজিদ, গির্জা এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়।
সাধারণ দোকান: মুদিখানা, সুপারমার্কেট এবং অন্যান্য খুচরো বিক্রেতা।
পাইকারী বিক্রেতা ও পরিবেশক: বড়ো আকারে উৎপাদন করলে পাইকারী বিক্রেতাদের মাধ্যমে বাজারজাত করা যায়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম: অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, মীশো-র মতো ই-কমার্স সাইটে আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন।

যোগ এবং মেডিটেশন কেন্দ্র: এই জায়গাগুলোতেও ধুপকাঠির ভালো চাহিদা রয়েছে।
ধুপকাঠি একটি নিত্য প্রয়োজনীয় ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পণ্য হওয়ায় এর বাজার সারা দেশজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে এবং এর চাহিদা প্রায় সারা বছরই থাকে। সঠিক পরিকল্পনা, মানসম্মত পণ্য এবং কার্যকর বিপণন কৌশল থাকলে এই ব্যবসা থেকে ভালো মুনাফা অর্জন করা সম্ভব।